এমভয়েস ডেস্ক, সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২২: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় অবৈধ ইট ভাটার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে অস্ত্রের ঠেকিয়ে সাংবাদিককে জিম্মি ও মারধরের ঘটনায় চালিয়ে কাঞ্চন কুমার তুরি (৩৬), পিতা জীবন কৃষ্ণ তুরি কে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার দিবাগত রাত ১১ টার দিকে তাকে আটক করে পুলিশ।
সোমবার বিকালে ভুুক্তভোগী সাংবাদিক আবু আজাদ বাদি হয়ে রাঙ্গুনিয়া মডেল থানায় এতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাত ৫-৭ জনকে আসামি করে হত্যা চেষ্টা, মারধর, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়া, অপহরণ এবং চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মহিউদ্দিন তালুকদার মোহন (৪০), চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন চৌধুরী (৫৫), ইট ভাটার ম্যানেজার কামরান (৩০), মোহনের সহযোগী কাঞ্চন তুড়ির (৩০) নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাত আরো ৫-৭ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে আসামি করা হয়
মামলার বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুব মিলকী এমভয়েস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলাটি রেকর্ডের পর পর আমরা বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কাঞ্চন কুমার তুরি (৩৬) কে আটক করতে সক্ষম হয়। বাকীদের আটক করতে অভিযান অব্যহত রয়েছে। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।
গত রোববার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে রাঙ্গুনিয়ায় অবৈধ ইট ভাটার ছবি তোলায় স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন তালুকদার মোহনসহ ৫-৬ জন পিস্তল ঠেকিয়ে সাংবাদিক আবু আজাদকে মারধর করে। অস্ত্রের মুখে মোহন ওই সাংবাদিককে গাড়িতে তুলে স্থানীয় মঘাছড়ি বাজারে নিয়েও কয়েক দফা পেটায়। এরপর তার কার্যালয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতন করে। তার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলে এবং মানিব্যাগ ও আইডি কার্ড- সব কেড়ে নিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। মারধরের এক পর্যায়ে মোহনের মোবাইল ফোন দিয়ে আবু আজাদের সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সঙ্গে ফোনে কথাও বলে। এরপর ওই সাংবাদিকের পকেটে মোহন নিজের ভিজিটিং কার্ড ঢুকিয়ে দিয়ে ক্ষমতা থাকলে কিছু করতে বলে হুমকিও দেয়।
এদিকে এ ঘটনায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে আগামী ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সাংবাদিক নির্যাতনের এ ধরনের ঘটনা যেমন উদ্বেগজনক তেমনি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া অবৈধ ইটভাটা প্রকৃতির জন্য মারাত্মক হুমকির। বিষয়টির সার্বিক অনুসন্ধান এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে কমিশনে আগামী ০১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে বলা হয়েছে।”
এছাড়াও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) নেতৃবৃন্দ।
টিএএস/এএএম/৬