।।প্রতাপ বনিক।।
এমভয়েস ডেস্ক, মীরসরাইয় (চট্টগ্রাম), মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০২২: সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও পানের জনপ্রিয়তা রয়েছে। পান খাওয়ার সৌখিন লোক শহর থেকে গ্রামে বেশি দেখা যায়। শুধুমাত্র খাওয়া নয়, বিয়ে বাড়ি, সামাজিক অনুষ্ঠান পান দিয়ে আপ্যায়ণ এখন ট্র্যাডিশনাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের মধ্যে মহেশখালীর পান অনেক প্রসিদ্ধ। তবে বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে পানের বরজ। কিন্তু পুঁজি বেড়ে যাওয়ায় মীরসরাইয়ে পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে পান চাষিরা।
জানা গেছে, মীরসরাই উপজেলায় এক দশক আগে বিভিন্ন এলাকায় পানের বরজ থাকলেও বর্তমানে শুধু হিঙ্গুলী ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন এলাকায় বরজ দেখা যায়। গত কয়েক বছর আগে ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন এলাকায়ও পানের বরজ ছিল অনেকগুলো। বর্তমানে ওই এলাকায় পানের বরজ শূন্যের কোঠায়। পান চাষে খরচ বেড়ে যাওয়ায় চাষীদের হার অনেক কমে গেছে। পান চাষের জন্য প্রয়োজনীয় বাঁশের খুঁটি, পাহাড়ি ছনের দাম বেড়ে যাওয়ায় পুঁজি বেড়ে গেছে। বাঁশের খুটির দাম বেড়েছে, ছনের দাম এখন ৫০০/ ৬০০ এক সময় ২০০/৩০০ টাকা দিয়ে পাওয়া যেত। এছাড়া বেড়েছে শ্রমিকের মজুরী।
উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নে পানচাষী নারায়ন আইচ জানান, আমি ১০ শতাংশ জমি ইজারা নিয়ে চাষ করি। প্রতিবছর ইজারা দিতে হয় তিন হাজার টাকা। প্রতি মাসে ৫/৬ হাজার টাকা ব্যয় হয় আর পান বিক্রি করে আয় হয় সাত থেকে আট হাজার টাকা। এছাড়াও নিজে খেটে তেমন টাকা থাকে না। গত দুই বছর করোনা মহামারীর জন্য লোকসানে ছিলাম এ মৌসুমেও পানের দাম কম থাকায় তেমন লাভ হবে না।
একই ইউনিয়নের আরেক পান চাষী মরণ সেন জানান, আমাদের পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামে একসময় শতভাগ পান চাষী ছিল এখন কমতে কমতে অর্ধেকে নেমেছে। বাপদাদার পুরাতন পেশা হিসেবে এখনো অনেকে টিকিয়ে রেখেছেন। যাদের পানক্ষেত একবার নষ্ট হয়েছে তারা পুঁজির অভাবে পুনরায় আর শুরু করতে পারছেনা। পাশাপাশি অন্য ফসল চাষ না করলে পরিবার চালানো সম্ভব হয় না। সরকারি অন্যান্য চাষে যে সুবিধা দেই পান চাষীদের জন্য সরকারি কোন সুবিধা পাননা বলেও জানান তিনি।
উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার (উন্নয়ন) কাজী নুরুল আলম জানান, মীরসরাইয়ে ৫ একর জমিতে পানে চাষ হয়। পান চাষে বর্তমানে ২৫ থেকে ৩০ জন চাষী যুক্ত রয়েছে। কয়েকটি এলাকায় চাষ বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা পান চাষীদের পানের বরজ পরিদর্শনসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি।এ
এএম/এমএইচএম/৬